প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস

মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার ইতিকথা

বর্তমান ভান্ডারিয়া মজিদা বেগম বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পিছনে কিছু কথা ভবিষ্যৎ ও বর্তমান প্রজন্মের জন্য তুলে ধরতে চাই। ইতিহাস কখনো কাল্পনিক নয়, ইতিহাস অতীত ঘটনাবলীর সাক্ষী এবং  বর্তমানকে সুসজ্জিত ও নির্ভুলভাবে সাজিয়ে তোলো। নারী শিক্ষার অগ্রগতিতে স্থানীয় সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ের ভর্তি কোঠা পদ্ধতি নারী শিক্ষার অগ্রগতীর পথে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। আর এই ভান্ডারিয়া বন্দর সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ের ভর্তির কোঠা সীমিত হওয়ায় অধিকাংশ মেধাবী ও দরিদ্র শিক্ষার্থীরা অকালে শিক্ষা জীবন শেষ হওয়ার উপক্রম দেখা দেয়। ফলে ১৯৯৫ সালে ভান্ডারিয়ার স্থানীয় গুনীজন ও সুশীল সমাজ, নারী শিক্ষা গতিধারাকে ত্বরাম্মিত করার লক্ষে একটি বেসরকারী বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার জন্য জনাব মোয়াজ্জেম হোসেন মিয়া, জনাব নূরুল হক জমাদ্দার, জনাব আজাহার উদ্দিন মিয়া, জনাব মনিরুল হক জমাদ্দার, জনাব সোহরাব উদ্দিন মিয়া, জনাব আশ্রাফ উদ্দিন মিয়া, বাবু অতুল চন্দ্র বিশ্বাস প্রমুখ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১৯৯৫ সালের ডিসেম্বর মাসে তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রী জনাব আনোয়ার হোসেন মঞ্জু মহোদয়ের সঙ্গে স্বাক্ষাৎ করেন। তিনি বেসরকারি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য সুখী জনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান। জনাব আনোয়ার হোসেন মঞ্জু মহোদয়ের নারী শিক্ষার অগ্রগতির দিক চিন্তা করে তাহার মহিয়সী মাতা জনাবা মজিদা বেগম নামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করার জন্য তৎকালীন সাংগঠনিক কমিটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্তের পরে ১৯৯৬ সালের ১লা জানুয়ারী সকাল সিফটে স্থানীয় সরকারী বালিকা বিদ্যালয় ক্লাস শুরু হয়। এবং ক্লাস শুরুর পথে জনাব এ.জেড আঃ গনি, জনাব আঃ হালিম উকিল, জনাব শামসুল হক প্রমুখ বিভিন্ন রকমের সহযোগীতা প্রদান করিয়া বিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু করেন।

বিদ্যালয়টির যাত্রা শুরুর পথে যে সকল শিক্ষকবৃন্দ অক্লান্ত পরিশ্রম, মেধা, সময় ইত্যাদি দিয়ে সহযোগীতা করেছেন তারা হলেন জনাব মোঃ ইউনুস আলী, জনাব মমতাজ বেগম, জনাব মোনালিসা এলিসান, জনাব শাহানাজ পারভীন, জনাব তাহমিনা আক্তার, জনাব পূর্নিমা রানী প্রমুখ। তাহারা বিদ্যালয়টিতে ৬ষ্ঠ হইতে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত ১২০ জন শিক্ষার্থী নিয়া শ্রেনী কক্ষে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করেন। তৎকালীন সময়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন জনাব সোহরাব উদ্দিন মিয়া এবং করনিক পদে দায়িত্ব পালন করেন জনাব শাহজাহান হাওলাদার। দপ্তরি ছিলেন আঃ লতিফ জমাদ্দার ও আয়া ছিলেন সালমা বেগম এবং মান্নান শরীফ (নৈশ প্রহরী)।

অতঃপর ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাইতে থাকেন। তখন সাংগঠনিক কমিটির চেয়ারম্যান মহোদয় জনাব আনোয়ার হোসেন মঞ্জু মহোদয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করিলে তাহার পরামর্শ মোতাবেক মজিদা বেগম মহিলা কলেজ সংলগ্ন বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার জন্য অনুরোধ করেন্ তার পরামর্শ মোতাবেক পরবর্তীতে ১.৪১ একর সম্পত্তির উপরে মজিদা বেগম বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয। সর্বপরি মজিদা বগম বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়  প্রতিষ্ঠার জন্য জনাব আনোয়ার হোসেন মঞ্জু মহোদয়ের পরিবারের সকল সদস্যবর্গ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করিয়াছিল।

এরপরে ১৯৯৮ সালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়ে সমস্যা দেখা দিলে সাংগঠনিক কমিটির সদস্যবৃন্দ জনাব আনোয়ার হোসেন মঞ্জু মহোদয়ের সংগে স্বাক্ষাৎ করতঃ বিধি মোতাবেক একজন উচ্চশিক্ষিত দ্ক্ষ প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করার জন্য নির্দেশ দেন। তার নির্দেশ মতে বিধি মোতাবেক মোঃ ফারুকুজ্জামান (বি.এ. সম্মান অর্থনীতি, এম,এসএস বিএড) প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করেন। পরবর্তীতে বিধি মোতাবেক বিদ্যালয়টি ০১-০১-১৯৯৮ ইং সনে একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করে এবং ০১-০২-১৯৯৯ ইং সনে এম,পি,ও ভূক্ত হয়। পরবর্তীতে মাধ্যমিক পর্যায় বিধি মোতাবেক সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করতঃ ০১-০১-২০০২ সনে স্বীকৃতি লাভ করে এবং ০১-০১-২০০৩ ইং সনে এম,পি,ও ভূক্তি লাভ করে। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে প্রায় ৪০০ শতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রহিয়াছে। দিন দিন শিক্ষার্থীর হার ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাইতেছে। এস,এস,সি পরীক্ষার ফলাফল প্রায় ৯৫% এবং জে,এস,সি পরীক্ষার ফলাফল ১০০% আশাকরা যায়। অচিরেই শিক্ষক শিক্ষিকাদের আন্তরিকতার প্রেক্ষিতে এস,এস,সি সহ জে,এস,সি এর ফলাফল গুনগত ও পরিমানগত মানসহ ১০০% উন্নীত হইবে বলিয়া আশা করা যায়। উল্লেখ্য বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, কর্মচারী ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সার্বিক সহযোগিতা পেলে বিদ্যালয়টি একটি মডেল স্কুল হিসাবে রুপান্তরিত হইবে এবং বাস্তবায়িত হইবে জনাব আনোয়ার হোসেন মঞ্জু মহোদয়ের স্বপ্ন।